সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারী

“জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ”-২০২০: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর ন্যায় “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ”-২০২০ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান করেছেন। প্রতিবছর জেলা/উপজেলা পর্যায়ে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারীনেত্রীগণ বিভিন্ন ক্যাটা্গরিতে জয়িতা পুরস্কার ভূষিতহন। এই বৎসর (২০২০) ৫টি ক্যাটাগরিতে ১৪জন নারীনেত্রী জয়িতা সংবর্ধনা পেয়েছেন।

৫টি ক্যাটাগরিতে যে সকল নারীনেত্রীগণ জয়িতা সংবর্ধনা পেয়েছেন-
১. রত্নগর্ভা জননী যে নারী- ১.লাভলী ইয়াছমিন চীধুরী- কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা, নওগাঁ। ২. তৃপ্তি মন্ডল -বটিয়াঘাটা, খুলনা।
২. নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন যে নারী-
৩. অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী যে নারী-১. শাপলা বেগম-মহাদেবপুর, নওগাঁ। ২. সোমাকর-বাকাল, আগৈলঝাড়া, বরিশাল।
৪. শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী যে নারী-১. জহুরা বেগম- কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা, নওগাঁ। ২. মোসা: হাসিনা বেগম- ধানখোলা, গাংনী, মেহেরপুর।
৫. সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যে নারী- ১.তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত- সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ২. খোদেজা বেগম –সরদহ, চারঘাট, রাজশাহী। ৩. ফাইমা বেগম- দিবর, পত্নীতলা, নওগাঁ। ৪. লাখি আক্তার- সদর, মাদারীপুর। ৫. জেবুন নেসা- ঘাটাইল, টাংগাইল। ৬. শিখা রাণী দাস- ঝাওয়াইল, গোপালপুর, টাংগাইল।

সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর পশ্চাৎপদতার ইতিহাস অতি প্রাচীন। রাষ্ট্রীয়, সরকারী এমনকি পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এখনও বাংলাদেশের নারীরা পিছিয়ে আছেন। তবে ইদানিংকালে নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসছেন। নারীদের ক্ষমতায়িত করার জন্য সরকারও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নারীরা স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন এবং সফলতাও লাভ করছেন। বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নেত্রীরাও এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়ভাবে এগিয়ে আসছেন।

স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০১৯: আসন স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০১৯ সালে ৫টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারীনেত্রীদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহন করেন প্রায় ৩০ জন নারীনেত্রী। তার মধ্যে ১জন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে (রংপুর সদর) এবং ১১জন নারীনেত্রী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসন নির্বাচনে বিজয়লাভ করেছেন।

উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসন নির্বাচনে অংশগ্রহন নারীনেত্রীদের চিত্র-২৯শে জানুয়ারী, ২০১৮: সারাদেশে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারীনেত্রীদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসন নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন প্রায় ৫০ জন। তার মধ্যে ২৬ জন নারীনেত্রী উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসন নির্বাচনে বিজয়লাভ করেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচন-২০১৬ সংরক্ষিত নারী আসনে নারীনেত্রীদের অংশগ্রহন: বাংলাদেশে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হল জেলা পরিষদ নির্বাচন; বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সদস্যরা সারা দেশে বিভিন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন জেলায় ৬জন নারীনেত্রী নির্বাচিত হয়ে বিজয়ী লাভ করেন।

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২০৫ জন তার মধ্যে ১১৫ জন নির্বাচনে বিজয়ী লাভ করেন। ঢাকা-০৬,ময়মনসিংহ-০৪, খুলনা-২৬, ঝিনাইদহ-০৬, বরিশাল-১২,সিলেট-২৫, রংপুর-০৭, রাজশাহী-২৪, কুমিল্লা-০৩, চট্রগ্রাম-০২ সারাদেশ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন-২০১৬, সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১১৫জন বিজয়ী লাভ করেছেন।

২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সংরক্ষিত আসন নির্বাচনে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের ৮৫ জন নারীনেত্রী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তাদের মধ্যে ৪৬ জন জয়যুক্ত হন।
নারীনেত্রীরা বিভিন্ন সময় স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে। ২০১৪-২০১৫ সালে ৫৪ জন নারীনেত্রী গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত জয়িতা পুরস্কার লাভ করেছেন।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের ৭৮ জন নারীনেত্রী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তাদের মধ্যে ৩৮ জন জয়যুক্ত হন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে একজন নারীনেত্রী বিজয়ী হয়েছেন।

২০১২-২০১৩ সালে সিটি কপোর্রেশন নির্বাচনে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কে-এর ১৫ জন নারীনেত্রী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে কমিশনার পদে একজন এ কাউন্সিলর পদে ছয়জন জয়লাভ করেন।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দরের স্থানীয় কমিটি, স্কুল কমিটি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কমিটিতে ২,৫৭০ নারীনেত্রীর অবিগম্যতা তৈরি হয়েছে।

২০১০ সালে স্থনীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের ২১২ জন নারীনেত্রী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও সদস্য পদে ২১০ জন, চেয়ারম্যান ১ জন ও সদস্য পদে ১০২ জন জয়যুক্ত হন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় কমিটি, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংসকৃতিক কমিটিতে ২৩৫০ নারী নেত্রীর অভিগম্যতা তৈরি হয়েছে।

২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের ৪৫ জন নারীনেত্রী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তাদের মধ্যে ১৮ জন জয়যুক্ত হন।