জনসচেতনতা সৃষ্টিমূলক ক্যাম্পেইন

ক্যাম্পেইন শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে প্রচারাভিযান। প্রচলিত অর্থে ক্যাম্পেইন বলতে আমরা বুঝি কোন একটি বিষয় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারণা। যেমন – ডায়ারিয়া রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করা ইত্যাদি।

ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সহজেই মানুষকে সচেতন করা যায়, মানুষ যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়, মতবিনিময় করার সুযোগ থাকে এবং জনগণের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিনা খরচে কিংবা স্বল্প খরচে মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হয়।

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর নারীনেত্রীগণ বিশ্বাস করেন যে, মানুষ হিসেবে নারীদেরও রযেছে স্বচ্ছল ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন গঠনের অধিকার আর সেজন্যে প্রয়োজন সমাজের প্রতিটি স্তরের সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিযায় নারীর অর্ন্তভূক্তি ও সমঅংশগ্রহণ। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা নিজ এলাকায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন। এই উদ্যোগগুলোর মধ্যে ক্যাম্পেইন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

যে সকল বিষয়ে সাধারণ মানুষ (সাধারণত পিছিয়ে পড়া মানুষ) সচেতন হলে অথবা অভ্যাস পরিবর্তন করলে তার বা তাদের জীবনযাত্রার কাঙ্খিত পরিবর্তন আসবে সেসব বিষয়ে ক্যাম্পেইন করা হয়ে থাকে। সাধারনত র‌্যালী, উঠান বৈঠক, মানববন্ধন, কর্মশালা, আলোচনা সভা, দিবস উদযাপন ইত্যাদি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নারীনেত্রীরা নারীনির্যাতন, যৌতুক, নারী পাচার, বাল্যবিবাহ রোধ, বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন, জন্ম নিবন্ধীকরণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, স্যানিটেশন, আর্সেনিক, পলিথিন বর্জন, ধূমপান বর্জন, ইত্যাদি বিষয়ে ক্যাম্পেইন করে থাকেন।

বিষয়বস্তু নির্বাচনের সময় অনেক ক্ষেত্রে এলাকায় উদ্ভূত সমস্যাকেও প্রাধান্য দেয়া হয়। যেমন – আর্সেনিক কবলিত এলাকায় এই সমস্যা সম্পর্কেই ক্যাম্পেইন করা জরুরি। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য তা হলো কোনো একটি সমস্যা যা ঐ সময়েই সৃষ্টি হয়েছে, যেমন হঠাৎ করে গ্রামে ডায়ারিয়া দেখা দিল, সে সময় যদি এই বিষয়ে ক্যাম্পেইন করা যায়, তবে এর সুফল জনগন সহজেই পাবে অর্থাৎ কার্যক্রমটি সফল হবে।

নারীনেত্রীরা সাধারনত নারীদের জন্য দিনের অবসর সময়, পুরুষদের জন্য সন্ধ্যায় বা রাতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রাম পর্যায়ে বাড়িতে বাড়িতে অথবা উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন পরিচালনা  করে থাকেন।

ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য সাধারনত বক্তৃতা, প্রশ্ন-উত্তর রোল প্লে, নাটিকা, বাউল গান এবং প্রদর্শনী ইত্যাদি পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয়। উল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর বাইরেও স্থানীয়ভাবে কার্যকর হবে এমন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন – আঞ্চলিক/গ্রাম্যগীত, মাইকিং ইত্যাদি।