কোভিড-১৯ মহামারিতে প্রায় প্রতিটি দেশ আজ বিপর্যস্ত। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, গবেষক করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কারে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। উন্নত বা অনুন্নত – সব দেশেই সকলস্তরের মানুষ আজ লড়াই করছেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। বিশ্ব জুড়ে অসহায় মানুষের প্রতি মানবিক সহায়তার আবেদনে হাত বাড়িয়েছেন অযুত মানুষ।
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’ – এ সত্য প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশেও লাখো মানুষের সহায়তা সাহস যুগিয়ে চলেছে করোনা আক্রান্ত ও আতঙ্কিত মানুষের মাঝে। এমনই একজন মানবিক মানুষ ঢাকা গেন্ডারিয়ার রাশিদা আক্তার শেলি। পেশায় আইনজীবী হলেও তাঁর নেশা মানবসেবা। আর এ কারণেই বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন তিনি। ঢাকা জজকোর্টে আইন চর্চার পাশাপাশি একজন স্বেচ্ছাব্রতী মানুষ হিসেবে ‘বিকশিত নারী নেটওয়ার্কে’র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি তিনি।
মার্চ মাসে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্তের পর দ্রুত গতিতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মানুষ হয়ে যায় দিশেহারা। আতঙ্ক প্রতিরোধে এবং মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে ’ইয়ূথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে’র সভাপতি হিসেবে রাশিদা আক্তার শেলি ২৫০০ লিফলেট এলাকায় বিতরণ করেন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষিত হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। শেলি নিজ উদ্যোগে তার এলাকায় এমন পাঁচটি হতদরিদ্র পরিবারে ৫০০০/- টাকা সহায়তা করেন। এর পাশাপাশি নারীনেত্রী শামীমা আফরোজ, মেহেরুন নেছা রুবি, মমতাজ জাফর ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সহায়তায় আরো দশটি পরিবারে (পরিবার প্রতি চাল ৫ কেজি, ডাল ১ কেজি, পিয়াজ ১ কেজি, লবণ ১ কেজি, আলু ২ কেজি ও তেল ১ লিটার) খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
একজন প্রকৃত নেতা প্রতিনিয়তই দরিদ্র, অসহায় মানুষদের সহায়তার জন্য চিন্তা করেন। রাশিদা আক্তার শেলিও তেমনি নিজ এলাকার হতদরিদ্র পাড়া-প্রতিবেশীদের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করেন। ফলশ্রুতিতে ইয়ূথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ও আস্থা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নারীনেত্রী রাবেয়া বসরী রুমি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এলাকার ২৫টি হতদরিদ্র পরিবারে ঈদের শুভেচ্ছা হিসেবে (পরিবার প্রতি চাল ৫ কেজি, পোলাও চাল ১ কেজি, ডাল ১ কেজি, পিয়াজ ১ কেজি, লবণ ১ কেজি, আলু ২ কেজি, চিনি ১ কেজি, তেল ১ লিটার, সেমাই ২৫০ গ্রাম, গুড়া দুধ ২০০ গ্রাম, সাবান ১টি, মাস্ক ১টি) খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন। এছাড়া তিনি একজন আইনজীবি হিসেবে প্রতিনিয়ত এই পরিস্থিতিতে অসহায়দের আইনি বিষয়ে পরামর্শ প্রদান অব্যাহত।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে বিশ্বব্যাপী মানবতার যে বিপর্যয় ঘটেছে, সভ্যতার ইতিহাসে তার কোনো নজির নেই। কিন্তু মানবিক সহায়তার যে সাড়া মানুষ মানুষের প্রতি প্রদর্শন করছে তা দৃষ্টান্তমূলক। নারী হিসেবে নয়, বরং একজন মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে দায়িত্ব ও ’কমিটমেন্ট’ তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন রাশিদা আক্তার শেলি।